প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘কক্সবাজারে প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি স্থাপনের মাধ্যমে দেশের সামরিক ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে একটি পূর্ণাঙ্গ ও আধুনিক সাবমেরিন ঘাঁটি চালু হওয়ায় বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে একটি গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হয়।’
সোমবার (২০ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে কক্সবাজারের পেকুয়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি ‘বিএনএস শেখ হাসিনা’- কমিশনিং অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তার সরকার ২০১৭ সালের ১২ মার্চ নৌ বহরে দুটি সাবমেরিন (বিএনএস নবযাত্রা ও বিএনএস জয়যাত্রা) যুক্ত করে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে একটি পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের তাদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি দেশ গড়ার জন্য কাজ করতে এবং সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে উন্মোচনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে দেশ গড়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন। কারণ, আমরা আমাদের বিশাল সামুদ্রিক সম্পদ অন্বেষণ করার জন্য একটি সুনীল অর্থনীতি কর্মপন্থা নিয়েছি।’
তিনি বলেন, সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশের অনেক সুযোগ রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে হামলা হলে তার সরকার দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীকে সক্ষম হিসেবে গড়ে তুলছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। কিন্তু, আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করতে হবে। যদি বাংলাদেশ এমন পরিস্থিতিতে পড়ে, এটা মাথায় রেখে আমরা আমাদের বাহিনী প্রস্তুত করছি’।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে ৪টি ফ্রিগেট, ৬টি করভেট, ৪টি বড় প্যাট্রোল ক্রাফট, ৫টি প্যাট্রোল ক্রাফট এবং ২টি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ধন্যবাদ জানান, কারণ এই বাহিনী শুধু বাংলাদেশের জন্য জাহাজ নির্মাণই করছে না, বিভিন্ন জলযান নির্মাণ করে বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও করছে।
পেকুয়া ভেন্যু থেকে স্বাগত বক্তব্য দেন নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে নৌবাহিনী প্রধান সাবমেরিন ঘাঁটির কমান্ডিং অফিসার কমডোর এম আতিকুর রহমানের কাছে কমিশনিং ফরম্যান (অর্ডার) হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে বিএনএস শেখ হাসিনার নামফলক উন্মোচন করা হয়।
নবনির্মিত সাবমেরিন ঘাঁটিতে একসঙ্গে মোট ছয়টি সাবমেরিন এবং আটটি যুদ্ধজাহাজ থাকতে পারে।